সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন দেশে স্বাক্ষরতা ও শিক্ষার হার বাড়লেও, সমাজ এখনো অনেকক্ষেত্রেই মধ্যযুগীয় অন্ধসংস্কার আচ্ছন্ন। তখন এই প্রশ্নটি উঠে আসে, স্কুল কলেজে আমরা বিজ্ঞান পড়ছি ঠিকই, কিন্তু বিজ্ঞানমনস্ক কি হয়ে উঠতে পারছি? বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনার পেছনে অন্তর্নিহিত কার্য্যকারণ বিচার করতে সচেষ্ট কি আমরা, না কি দৈবের ওপর ছেড়ে দিতেই বেশি আগ্রহী? বিজ্ঞানকে জানার যে আনন্দ, যে রস তার স্বাদ কি গ্রহণ করতে পারছি আমরা? না কি বিজ্ঞান খালি পরীক্ষার খাতা আর নম্বরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ?
এই আনন্দ, এই রস সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া, সবাইকে অজানাকে জানার সুযোগ করে দেওয়া , তাদের কাছে বিজ্ঞানের কথা পৌঁছে দেওয়া কিন্তু শুধু রাষ্ট্রের দায়িত্ব নয়। রাষ্ট্রের সাথে এ উদ্যোগে বিজ্ঞানের ছাত্র ছাত্রীদেরও এগিয়ে আসতে হবে। নিজের অর্জিত জ্ঞান কাছের মানুষদের – যারা বিজ্ঞান থেকে হয়তো এখন অনেকটাই দূরে , তাদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ও বিজ্ঞানমনস্কতা জাগ্রত করতে পারার মধ্যেও রয়েছে এক ধরণেও স্বার্থকতা, পরিতৃপ্তি ও আনন্দ।
কিন্তু, নতুন বিষয় জানার ক্ষেত্রে মাধ্যম এবং ভাষা, ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে। অজানা জটিল বিষয় জানতে মাতৃভাষার কোন বিকল্প হয় না, হতে পারেও না । আমাদের বাংলায় ( দুই দেশের ) মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চার সুযোগ আজও অপ্রতুল । অন্যদিকে বিশ্বায়নের যুগে কর্মব্যস্ত মানুষ বই পড়বার সময় ও ইচ্ছে দুইই হারিয়েছে। বইয়ের জায়গা নিয়েছে চলভাষ এবং তাতে থাকা সামাজিক মাধ্যমগুলোর জানালা। তাই বিজ্ঞান থেকে কিছুটা দূরে থাকা কিন্তু বিজ্ঞানে আগ্রহী মানুষদের কাছে বিজ্ঞানকে সহজ সরল ভাবে বাংলা ভাষায় সম্পূর্ণ ডিজিটাল মাধ্যমে পৌঁছে দিতে আমাদের এই প্রয়াস – এলেবেলে।
আমাদের এই অলাভজনক প্রয়াসের উদ্দেশ্যঃ
১) বাংলা ভাষায় গল্পের মত করে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনাবলীর পিছনে থাকা বৈজ্ঞানিক কারণ উপস্থাপন করা, বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার বিভিন্ন ইতিহাস, আধুনিক গবেষণা ও সেই গবেষণার ভবিষ্যত রূপরেখা, সাথে সমাজ জীবনে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে অবগত করা।
২) বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা প্রবহমান রাখার জন্যে বৈজ্ঞানিক নানা শব্দের পরিভাষা ভীষণ জরুরী। নিজেদের উপস্থাপনায় বাংলা পরিভাষার প্রয়োগও আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য।
৩) স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের বিশ্বেরনানা প্রান্তে ঘটে চলা গবেষণা ও সেগুলোর ফলাফল সম্পর্কে অবগত করতে আমরা উদগ্রীব। যাতে তারা আগ্রহী হয় বিজ্ঞানের প্রতি, যা তাদের ভবিষ্যতে পড়াশুনো বা গবেষণার জন্যে নিজের পছন্দের বিষয়টি বেছে নিতে পরোক্ষয়ে সহায়তা করবে।